গনোরিয়া (Gonorrhea) – মহিলাদের কষ্টদায়ক যৌন ব্যাধি
গনোরিয়া কিঃ
মহিলাদের যৌন সংক্রামক রোগের মধ্যে গনোরিয়া (Gonorrhea) একটি অতিপরিচিত নাম। এটি প্রমেহ নামেও অনেকের কাছে পরিচিত। “নাইসেরিয়া গনোরিয়া” নামক ব্যাকটেরিয়া গনোরিয়া রোগের জীবাণুর বিস্তার করে। যোনি বা পায়ুপথে মিলন বা সঙ্গম বা ওরাল সেক্স বা মুখমেহন ইত্যাদির মাধ্যমে গনোরিয়া সংক্রমিত হতে পারে। তবে চুম্বন, হাত ধরা ইত্যাদি থেকে গনোরিয়া সংক্রমিত হতে পারেনা।
পেনিস বা পুরুষাঙ্গ, সারভিক্স বা জরায়ুর ছিদ্র, রেকটাম মলাশয় বা পায়ু, গলা ও চোখকে গনোরিয়া (Gonorrhea) আক্রান্ত করতে পারে।গণরিয়ার কারণে নারীর গর্ভধারণে অক্ষমতা তথা বন্ধ্যাত্বতাও অসম্ভব নয়। এমন কি সন্তান সম্ভাবনা নারীর পরবতী প্রজন্মতেও সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারে এই ইনফেকশনের কারণে।
আমাদের সমাজের মহিলাদের চেয়ে পুরুষরাই এই যৌনরোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন (বয়স ১৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে) । দীর্ঘদিন শরীরের বাইরে “নাইসেরিয়া গনোরিয়া” টিকে থাকতে পারে না, কেবল নিবিড় যৌন সংগমের মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরিত হয়েএরা বেঁচে থাকে । সংক্রমিত লোকের সাথে যৌন সংসর্গের দ্বারাই গনোরিয়া সংক্রমণ অর্জিত হয় ।
পুরুষের ক্ষেত্রে গনোরিয়ার উপসর্গঃ
- সাধারণত পুরুষদের মূত্রনালীর সম্মুখভাগে সংক্রমণ ঘটে।
- রোগের উপসর্গ যৌন মিলনের ২ থেকে ১০ দিন পর দেখা দেয়।
- মূত্রনালীতে প্রদাহের কারণে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা করে এবং বারবার প্রস্রাবের ইচ্ছা করে।
- যৌনাঙ্গের সংক্রমণের ফলে প্রথমে পানির মতো রস লিঙ্গপথে থেকে নিঃসৃত হয়। পরেএই রস ঘন, সবুজাভ-হলুদ হয়।
- প্রস্রাব সতঃফুর্তভাবে বেরিয়ে আসতে পারে না মূত্রনালীপথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হওয়ার কারণে ।যার ফলে কিডনিতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
- রোগী তীব্র ব্যথা অনুভব করে এপিডিডাইমিসে প্রদাহের কারণে ।
- অণ্ডকোষ স্ফীত হয়ে একটা আপেলের ন্যায় বড় হতে পারে।
- পায়ুপথে সমকামীরা যৌনসঙ্গম করলে পায়ুপথও সংক্রমিত হতে পারে যার ফলে মলনালীতে তীব্র ব্যথা হয় এবং রসে ভিজে যায়।
- যারা মুখ মৈথুনে অভ্যস্ত তাদের মুখে সংক্রমণ হওয়ায় ঘা সৃষ্টি হয় এবং গলাব্যথা হয়।
- অনেক দিনধরে সংক্রমণের কারণে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ, ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে।
নারীর ক্ষেত্রে গনোরিয়ার উপসর্গঃ
- সাদা, সবুজ কিংবা হলুদ বর্ণের অস্বাভাবিক নিঃসরণ যোনিপথে হয়ে থাকে।
- যৌন অঙ্গ সংক্রমণের কারণে যোনির ওষ্ঠদ্বয়ে লাল দগদগে ঘা হয়।
- ডিম্ববাহী নালীতে ব্যাথা দায়ক যন্ত্রণা হয়।
- প্রস্রাবের তীব্র ইচ্ছা অথচ প্রস্রাবের পর যন্ত্রণা দেখা যায়।
- তলপেটে ব্যথা হয়।
- বার্থোলিন গ্রন্থির ব্যাথা দায়ক যন্ত্রণা হয়।
- তলপেটে, ডিম্বাশ্বয় কিংবা ডিম্ববাহী নালীর মধ্যে ফোঁড়া হতে পারে।
- তীব্র ব্যথাসহ অনিয়মিত মাসিক হয়।
- নিজের সংক্রমিত যোনি থেকে মলদ্বার সংক্রমিত হতে পারে কিংবা পায়ুপথে সঙ্গম থেকেও মলদ্বার সংক্রমিত হতে পারে । মলনালী পথে রস নিঃসরণ এবং রক্তক্ষরণ হতে পারে।
- মুখ মৈথুনে অভ্যস্থদের মুখে সংক্রমণ হতে পারে।
- অনেক দিনধরে সংক্রমণের কারণে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ, ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে।
গনোরিয়া এবং গর্ভাবস্থাঃ
নারীর জননতন্ত্রের মধ্যে গনোরিয়ার জীবাণু বিচরণ করে, ডিম্ববাহী নালীতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে এবং এ জন্য নারীর সারা জীবনের জন্য বন্ধ্যাত্ব ঘটতে পারে কিংবা জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ হতে পারে। নারী গর্ভাবস্থায় গনোরিয়া জীবাণুতে আক্রান্ত হলে প্রসবকালে শিশুর মায়ের যোনি থেকে তার চোখে সংক্রমণ হতে পারে। নবজাতকশিশুর চিকিৎসা না করলে তার চোখে প্রদাহ হবে এমনকি সে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
রোগ নির্ণয়ঃ
বিস্তারিতভাবে রোগীর ইতিহাস শুনতে হবে। এরই মধ্যে সে কোনো যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিল কি-না তা প্রশ্ন করে ভালো ভাবে উত্তর জেনে নিতে হবে। যদি সম্পর্ক থাকলে তবে তা কতদিন আগে এবং কত জনের সঙ্গে, এসব জেনে নিতে হবে। অতঃপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। আক্রমণ যদি স্বল্পস্থায়ী হয়ে থাকে তাহলে পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রাস্তা থেকে নিঃসরিত পুঁজ বা পদার্থ এবং নারীদের ক্ষেত্রে মূত্রনালি ও জরায়ু নিঃসরিত পদার্থ পরীক্ষা করতে হবে। অনেক দিনস্থায়ী হলে প্রস্টেটগ্রন্থি ম্যাসাজের পর নিঃসরিত পদার্থ পরীক্ষা করতে হবে কিংবা সকালের প্রথম ফোঁটা প্রস্রাবও পরীক্ষা করা যেতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে জরায়ু নিঃসরিত বস্তু পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়াও সেনসিটিভিটি পরীক্ষা ও কালচার করা যেতে পারে।
প্রতিকার কিভাবে করা যেতে পারেঃ
- যৌনরোগের কুফল সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে।
- উপযুক্ত সঠিক বয়সে যৌন শিক্ষা প্রচলন।
- বেশির ভাগ নারীরই এ রোগের কোনো লক্ষণ থাকে না। তাই যে কোনো সময়ে এদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এই কারণ বহুনারী গমনে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
- রোগের লক্ষণ দেখামাত্রই চিকিৎসা করাতে হবে ।
- আক্রান্ত অবস্থায় স্বামী সহবাসে বা স্ত্রী মিলনের বিরত থাকা উচিত, তা না হলে তারাও আক্রান্ত হতে পারে।
- সর্বশেষে বিবাহিত যৌন জীবন সবার জন্য বিভিন্ন যৌনরোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র পথ।
কিছু সতর্কতা জরুরিঃ
সংক্রমিত বিছানার চাদর অথবা তোয়ালে থেকে শিশুরা এবং অল্পবয়স্ক মেয়েরা এ রোগ আক্রান্ত হতে পারে । শিশুদের ঘনবসতি এবং অপরিচ্ছন্নতা থেকেও গনোরিয়া হতে পারে। একজন ব্যক্তি গনোরিয়া থেকে মুক্তি পেলেও পুনরায় গনোরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে যদি সেখানে অল্প সংক্রমণ থেকে যায় কিংবা গনোরিয়ায় আক্রান্ত কারো সাথে যৌন মিলন ঘটে অথবা কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকে। তবে গনোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা কেউ লাভ করতে পারে না।
গনোরিয়ার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাঃ
গণোরিয়া চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধগুলো নিম্নরূপ:
মাকসল, নাইট্রিক-এসিড, অরাম-মিউর, ইউরেথ্রা, থুজা, সালফার, বেলেডোনা, সিপিয়া, ক্রিয়োজোট, পালসেটিলা, একোন, ক্যানাবিস, কোপেভা, হিপার, লাইকো, এসিড ফস ইত্যাদি।
[বি:দ্র: চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান/পরামর্শ ব্যাতীত কোন ঔষধ সেবন করা উচিৎ নয়।]
I have read so many articles or reviews regarding the blogger lovers however this piece of writing is really a good paragraph, keep it up. Allissa Chilton Geibel
Useful info. Fortunate me I found your web site accidentally, and I am stunned why this twist of fate did not took place earlier! I bookmarked it. Catlin Hasheem Epps
Well I truly enjoyed reading it. This information offered by you is very useful for good planning. Brooke Hazlett Fawn
You made some respectable points there. I looked on the web for the problem and discovered most people will accompany with your internet site. Jonie Arnoldo Embry
thank you admin